Ads

যেভাবে সালাত ফরজ হয়েছে মিরাজে

।। ড. মোহাঃ ইয়ামিন হোসেন ।।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য আসমানে আরোহণ করেন। এই ঘটনাটি বিভিন্ন হাদিসে এসেছে  । নিচে একটি হাদিস উল্লেখ করা হল যেখানে  ইসরা ও মিরাজের ঘটনা সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে । এই ঘটনা ইসলামী ঐতিহ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি মিরাজে সালাতের ফরয হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। ইসরা ও মিরাজ আসলে কি? ইসরা হচ্ছে “মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম) পর্যন্ত রাতের ভ্রমণ।”আর মিরাজ হচ্ছে “বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে আসমানে আরোহণ।”

পরিচ্ছদঃ ২৪২) মিরাজে কিভাবে সালাত ফরজ হল?

ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেনঃ আমার কাছে আবূ সুফিয়ান ইবন হারব (রা) হিরাকল-এর হাদীসে বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি এ কথাও বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমদেরকে সালাত, সত্যবাদিতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার নির্দেশ দিয়েছেন ।

৩৪২) ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমার ঘরের ছাদ খুলে দেয়া হল। তখন আমি মক্কায় ছিলাম। তারপর জিবরীল (আ) এসে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেন। আর তা যমযমের পানি দিয়ে ধুইলেন। এরপর হিকমত ও ঈমানে পরিপূর্ণ একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বক্ষে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেন। তারপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আসমানের দিকে নিয়ে চললেন। যখন দুনিয়ার আসমানে পৌঁছালাম, তখন জিবরীল (আঃ) আসমানের রক্ষককে বললেনঃ দরযা খোল। তিনি বললেনঃ কে? উত্তর দিলেনঃ আমি জিবরীল, আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনার সঙ্গে আর কেউ আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমার সঙ্গে মুহাম্মদ। তিনি আবার বললেনঃ তাঁকে কি আহবান করা হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেনঃ হাঁ।

তারপর আসমান খোলা হলে আমরা প্রথম আসমানে উঠলাম। সেখানে দেখলাম, এক লোক বসে আছেন এবং অনেকগুলো মানুষের আকৃতি তাঁর ডান পাশে রয়েছে এবং অনেকগুলো মানুষের আকৃতি বাম পাশেও রয়েছে। যখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন, হাসছেন আর যখন তিনি বাম দিকে তাকাচ্ছেন, কাঁদছেন। তিনি বললেনঃ খোশ আমদেদ, হে পুণ্যবান নাবী! হে নেক সন্তান! আমি জিবরীল (আঃ)কে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইনি কে? তিনি বললেনঃ ইনি আদম (আঃ)। আর তাঁর ডানে ও বায়ে তাঁর সন্তানদের রুহ। ডান দিকের লোকেরা জান্নাতী আর বা দিকের লোকেরা জাহান্নামী। এজন্য তিনি ডান দিকে তাকালে হাসেন আর বাঁ দিকে তাকালে কাঁদেন। তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় আকাশে উঠলেন। সেখানে উঠে রক্ষক কে বললেনঃ দরযা খোল। তখন রক্ষক প্রথম আসমানের রক্ষকের অনুরুপ প্রশ্ন করলেন। তারপর দরযা খুলে দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ এরপর আবূ যার বলেনঃ তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) আসমানসমূহে আদম (আঃ), ঈদরীস (আঃ), মূসা (আঃ), ঈসা (আঃ), ও ইবরাহীম (আঃ)-কে পেলেন। আবূ যার (রাঃ) তাঁদের অবস্থান নির্দিষ্ট ভাবে বলেননি। কেবল এতটুকু বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদম (আঃ)-কে প্রথম আসমানে এবং ইবরাহীম (আঃ)-কে ষষ্ট আসমানে পেয়েছেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ যখন জিবরীল (আঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইদরীস (আঃ) এর পাশ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ঈদরীস (আঃ) বললেনঃ খোশ আমদেদ! পুণ্যবান নাবী ও নেক ভাই! আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? জিবরীল (আঃ) বললেনঃ ইনি ঈদরীস (আঃ)। তারপর আমি মূসা (আঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ খোশ আমদেদ! পূণ্যবান রাসূল ও নেক ভাই। আমি বললাম ইনি কে? জিবরীল আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ মূসা (আঃ)। তারপর আমি ঈসা (আঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ খোশ আমদেদ ! পুণ্যবান রাসূল ও নেক ভাই। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? জিবরীল আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ইনি ঈসা আলাইহিস সালাম।

তারপর ইবরাহীম (আঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ খোশ আমদেদ ! পুণ্যবান নাবী ও নেক সন্তান। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? জিবরীল আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ইনি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন যে, ইবনু হাযম আমাকে খবর দিয়েছেন ইবনু আব্বাস ও আবূ হাব্বা আনসারী (রহঃ) উভয়ে বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারপর আমাকে আরো উপরে উঠানো হল, আমি এমন এক সমতল স্থানে উপনীত হলাম, যেখান থেকে কলমের লেখার শব্দ শুনতে পেলাম। ইবনু হাযম (রহঃ) ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারপর আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করে দিলেন। আমি এ নিয়ে প্রত্যাবর্তনকালে যখন মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আপনার উম্মতের উপর আল্লাহ কি ফরয করেছেন? আমি বললামঃ পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করেছেন। তিনি বললেনঃ আপনি আপনার রবের কাছে ফিরে যান। কারণ আপনার উম্মত তা আদায় করতে সক্ষম হবে না।

আমি ফিরে গেলাম। আল্লাহ পাক কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। আমি মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আবার গেলাম আর বললামঃ কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আপনি আবার আপনার রবের কাছে যান। কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে সক্ষম হবে না। আমি ফিরে গেলাম। তখন আরো কিছু অংশ কমিয়ে দেওয়া হল। আবার মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে গেলাম, এবারো তিনি বললেনঃ আপনি আবার আপনার রবের কাছে যান। কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি আবার গেলাম, তখন আল্লাহ বললেনঃ এই পাঁচই (সওয়াবের দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (গণ্য হবে)। আমার কথার কোন পরিবর্তন নেই। আমি আবার মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে আসলে তিনি আমাকে আবারো বলললেনঃ আপনার রবের কাছে আবার যান। আমি বললামঃ আবার আমার রবের কাছে যেতে আমি লজ্জাবোধ করছি। তারপর জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। আর তখন তা বিভিন্ন রঙে ঢাকা ছিল, যার তারপর্য আমার জানা ছিল না। তারপর আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হল। আমি দেখলাম তাতে মুক্তার হার রয়েছে আর তাঁর মাটি কস্তুরি।

হাদিসটির বিশ্লেষণ

মি’রাজের ঘটনা এবং সালাত ফরজ হওয়ার পটভূমি

উপরোক্ত হাদিসটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মি’রাজ বা ঊর্ধ্বগমন সম্পর্কিত। মি’রাজের ঘটনা ইসলাম ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দুনিয়া থেকে আসমানসমূহ এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে আল্লাহ তা’আলা তার সাথে সরাসরি কথা বলেন এবং সালাত বা নামাজকে মুসলমানদের জন্য ফরজ করেন।

মি’রাজে সালাত ফরজ হওয়ার বিশদ বিবরণ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা থেকে বায়তুল মাকদিস এবং সেখান থেকে আকাশসমূহে গমন এবং বিভিন্ন নবীর সাথে সাক্ষাৎ মি’রাজের মূল অংশ। বিভিন্ন আকাশে বিভিন্ন নবীদের সাথে সাক্ষাৎ ও তাঁদের উক্তি নবীদের মর্যাদা এবং তাঁদের ভূমিকা প্রকাশ করে। বিশেষ করে, প্রথম আসমানে আদম আলাইহিস সালাম এবং ষষ্ঠ আসমানে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম-এর সাথে সাক্ষাতের বিবরণটি নবীদের মানবজাতির প্রতি দায়িত্ব এবং পুণ্যবানদের প্রতি তাঁদের সম্মানকে বোঝায়।

সালাত ফরজ হওয়ার প্রক্রিয়া

আল্লাহ তা’আলা প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেন। মুসা আলাইহিস সালাম-এর পরামর্শে এবং বারংবার আরজ করার ফলে আল্লাহ তা’আলা ৫০ ওয়াক্ত থেকে কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে নামাজ ফরজ করে দেন, তবে প্রতিটি সালাতের সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমান রাখেন। এই অংশটি মুসলমানদের জন্য আল্লাহর রহমতের পরিচয় এবং তাঁর দয়া ও ক্ষমাশীলতার বহিঃপ্রকাশ।

মানব জীবনে হাদিসটির প্রতিফলন

দৈনন্দিন জীবনে সালাতের গুরুত্ব

এই হাদিস থেকে জানা যায়, সালাত বা নামাজ মুসলমানদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য নয়, বরং এটি আত্মশুদ্ধি, একাগ্রতা এবং আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম।

১। আত্মশুদ্ধি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি

নামাজ মানুষকে আত্মশুদ্ধি, সংযম এবং মনোযোগী হতে সহায়তা করে। নিয়মিত নামাজ মানুষকে সৎপথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে এবং মনকে কলুষমুক্ত করে।

২। সমাজে শৃঙ্খলা ও ঐক্য

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানদের জীবনে শৃঙ্খলা আনে। এছাড়া, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সামাজিক সংযোগ ও ঐক্য বৃদ্ধি পায়।

৩। আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য

নামাজ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য বাড়ায়। এটি কষ্টের সময়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে সহায়ক এবং জীবনকে ধৈর্যের সাথে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

৪। আল্লাহর নৈকট্য

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে এবং তার দয়া ও ক্ষমাশীলতার আশ্রয় লাভ করে।

আধ্যাত্মিক উন্নয়ন

হাদিসটি মানুষকে তার আধ্যাত্মিক উন্নয়নে উদ্বুদ্ধ করে। সালাত মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য অনুভব করতে সহায়তা করে এবং তার প্রতি সমর্পিত হতে শেখায়।

দৈনন্দিন জীবনে পালনীয়

১। সময়নিষ্ঠা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের মধ্যে সময়নিষ্ঠা আনে এবং তাকে সুশৃঙ্খল হতে শেখায়।

২। নৈতিকতা

নামাজের মাধ্যমে সত্যবাদিতা, চরিত্রের পবিত্রতা এবং সততার শিক্ষা পাওয়া যায়।

৩। ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা

নামাজের মাধ্যমে ধৈর্যশীলতা এবং কৃতজ্ঞতার গুণাবলী অর্জিত হয়।

সার্বিকভাবে, এই হাদিস মুসলিম জীবনের একটি মৌলিক দিককে প্রকাশ করে যা ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং জীবনকে সুশৃঙ্খল ও পূণ্যবান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লেখকঃ প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক  মোঃ ইয়ামিন হোসেন 

আরও পড়ুন