Ads

হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ২য় পর্ব

।। জামান শামস ।।

হজ্ব যেভাবে শুরু হল (১)

হজ্ব শুরুর ইতিহাস পবিত্র কোরআন থেকে আমরা জানতে পারি। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ছিলেন দুনিয়ার হজ্ব প্রচলনকারী পয়গাম্বর। কিতাবধারী প্রতিটি ধর্মে অনুসারীরা কমবেশী তাঁর সঙ্গে পরিচিত। হযরত ইসা (আঃ), হযরত মুসা (আঃ এবং শেষ নবী মোহাম্মদ (সঃ) তাঁর বংশজাত। এক পুজারী বংশে তার জন্ম। আকাশের তারকা, গ্রহ নক্ষত্র থেকে গাছ পালা পর্যন্ত এমনকি মাটি বা পাথর দিন তৈরী পুতুলকে তারা প্রভুজ্ঞানে পূজা করত। রাজা বাদশাহদেরও মানুষ প্রভু শক্তির অধিকারী দেবতা মনে করত।

জ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে ইব্রাহীম ভাবতে শুরু করলেন চন্দ্র, তারকা, গ্রহ নক্ষত্র যদি খোদা-ই হবে তবে তাদের উদয় অস্ত কেন হবে? মুর্তি যদি মানুষের ভাগ্য নির্মাতা, কল্যাণ অকল্যাণের নির্দেশ করে তবে সে নিজেই এত দুর্বল কেন যে তার মুখে মাছি বসে বাহ্যত্যাগ করলে তা তাড়াতে পারেনা? রাজা বাদশাহরা যদি শক্তিমান হবেন তবে তাদের মৃত্যু হবে কেন? একসময় ভাবতে ভাবতে আবিস্কার করেন আকাশ ও জমীনের মালিক মানুষ সহ সকল সৃষ্টির স্রষ্টা পালনেওয়ালাকে। তিনি ঘোষণা করলেন-

اِنِّیۡ وَجَّهۡتُ وَجۡهِیَ لِلَّذِیۡ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ حَنِیۡفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ

আমি সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে কেবল সেই মহান স্বত্তাকেই ইবাদাতের নির্দিষ্ট করলাম যিনি আকাশ ও জমীনের স্রষ্টা এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি যে অংশীবাদীদের দলভূক্ত নই। ( সূরা আনআম ৭৯)

এরূপ বিপ্লবাত্মক ঘোষণার পর ইব্রাহীম (আঃ) এর উপর বিপদ মুসিবতের পাহাড় ভেঙ্গে পড়ল। পিতা আজর ছিল মুর্তি পুজারীদের নেতা। তিনি পুত্রের উপর কঠোর শাসন আরোপ করলেন। সমগ্র জাতি তার বিরুদ্ধে গেল এমনকি শাসক শ্রেণীও। তিনি ধৈর্যের সাথে সব সহ্য করলেন। একদিন নিজ হাতে মুর্তি ভেঙ্গে মুর্তির গলায় কুঠার ঝুলিয়ে বললেন আমাকে এর জন্য দায়ী না করে যাদের তোমরা শক্তি ও ক্ষমতার উৎস জ্ঞানে পুজা কর তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ মুর্তিটাকে বরং জিজ্ঞাসা কর। ইব্রাহীমের যুক্তির কাছে নমরুদের লোকেরা পরাস্ত হলেও তার জন্য প্রস্তুত হল অগ্নিকুন্ড। কিন্তু আল্লাহপাক অগ্নিকুন্ডকে শান্তিধামে পরিণত করে দিলেন।

অতঃপর জালিম সম্প্রদায় তাকে দেশ থেকে বহিস্কার করল। তিনি দ্বিধাহীন চিত্তে স্বজাতি, আত্মীয়স্বজন, জন্মভূমি সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে যাযাবর জীবন বরদাশত করে নিলেন। জীবনের ছিয়াশি বছর পর আল্লাহপাক সন্তান ইসমাঈলকে দান করলেন। ছোট্ট শিশু ইসমাঈলকে সাথে করে প্রসূতি হাজেরাকে নিয়ে অনির্দিষ্ট গন্তব্যে চললেন। পথ চলা যেন শেষ হয় না। অবশেষে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মক্কার এক জনমানবহীন প্রান্তরে পৌঁছলেন। এখানে না আছে খাবার পানীয়ের বন্দোবস্ত আর না আছে কোন সাহায্যকারী মানুষজন।

এরই মধ্যে ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে অসুস্থ স্ত্রী আর শিশু ইসমাঈলকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে বেরিয়ে গেলেন। কোন মমতাই তাকে রবের আহবান থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারল না। দুগ্ধ পোষ্য ইসমাঈলকে নিয়ে হাজেরা মরুভূমির তীব্র সুর্যতাপে তৃষ্ণার্ত হলে পানির জন্য হন্যে হয়ে ছাফা মারওয়া দুই পাহাড়ের মধ্যে সাতবার ছোটাছুটি করলেন। আল্লাহ পাক অবশেষে করুণাপ্রবন হন এবং শিশু পুত্র ইসমাঈলের পায়ের নীচে পানির ধারা সৃষ্টি করে দিলেন। যা আজ দুনিয়ার লক্ষ কোটি হাজীর কাছে একটা নিদর্শন হিসাবে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে আছে। আল্লাহ এ ঘটনা কুরআনে এ ভাবে বলেছেন-

اِنَّ الصَّفَا وَ الۡمَرۡوَۃَ مِنۡ شَعَآئِرِ اللّٰهِ ۚ فَمَنۡ حَجَّ الۡبَیۡتَ اَوِ اعۡتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِ اَنۡ یَّطَّوَّفَ بِهِمَا ؕ وَ مَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا ۙ فَاِنَّ اللّٰهَ شَاکِرٌ عَلِیۡمٌ

নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে বাইতুল্লাহর হজ্জ করবে কিংবা উমরা করবে তার কোন অপরাধ হবে না যে, সে এগুলোর তাওয়াফ করবে। আর যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কল্যাণ করবে, তবে নিশ্চয় শোকরকারী, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারা ১৫৮)

আরও পড়ুন-হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ১ম পর্ব

এরপর তৃতীয় পরীক্ষা এসে উপস্থিত হল। ইসমাইল (আঃ) বয়ঃপ্রাপ্ত কিশোর হলে আল্লাহপাক ইব্রাহীম (আঃ) কে স্বপ্নে নির্দেশ দিলেন পুত্রকে জবেহ করতে। পুত্রকে প্রস্তাব দিতেই তিনি কালবিলম্ব না করে রাজী হলেন। সুরা সাফফাতের ১০২-১০৬ পর্যন্ত আয়াতে আল্লাহপাক জগৎবাসীর কাছে ঘটনা বর্ণনা করেছেনঃ

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعۡیَ قَالَ یٰبُنَیَّ اِنِّیۡۤ اَرٰی فِی الۡمَنَامِ اَنِّیۡۤ اَذۡبَحُکَ فَانۡظُرۡ مَاذَا تَرٰی ؕ قَالَ یٰۤاَبَتِ افۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُ ۫ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ مِنَ الصّٰبِرِیۡنَ

অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইব্রাহীম বলল, হে পুত্র! আমি স্বপ্নে আদিষ্ট হয়েছি তোমাকে জবেহ করতে। বল, তোমার অভিমত কি? সে বলল, হে পিতা! আপনি নিশ্চিন্ত মনে আদেশমত কাজ করুন। আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যেই পাবেন।

فَلَمَّاۤ اَسۡلَمَا وَ تَلَّهٗ لِلۡجَبِیۡنِ ﴿۱۰۳﴾ۚ وَ نَادَیۡنٰهُ اَنۡ یّٰۤاِبۡرٰهِیۡمُ ﴿۱۰۴﴾ۙ قَدۡ صَدَّقۡتَ الرُّءۡیَا ۚ اِنَّا کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۰۵﴾ اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الۡبَلٰٓـؤُا الۡمُبِیۡنُ ﴿۱۰۶﴾

অতঃপর তারা উভয়ে যার যার উপর যে যে আদেশ ছিল তা পালন করল। ইব্রাহীম পুত্রকে জবেহর উদ্দেশ্যে কাত করে শোয়াল। তখন আমি ইব্রাহীমকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ বাস্তবায়ন করেই ছাড়লে। এভাবে আমি মুহসিন বান্দাদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।

এভাবে যৌবনের শুরুতে নবী আপন মালিকের আহবান ও দাওয়াতকে বিনাশর্তে কবুল করেছিলেন। যখন তাকে  বলা হল “আত্মসমর্পন কর”, তিনি বলেছিলেন أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَلَمِينَ আমি সারা জাহানের রবের কাছে পূর্ণ আত্ম সমর্পন করলাম। একথা বলেননি যে মা’বুদ বেছে বেছে তোমার হুকুমের যেগুলো নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ এবং স্বভাবে নিরপেক্ষ কেবল সেগুলি মানবো আর যেগুলো কঠিন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং জেল জুলুম অত্যাচার আর দেশান্তরের ভয় আছে সেগুলো মানবো না। এজন্যেই পুরোহিতের ঘরে জন্ম নিয়ে পৌরহিত্যের আসন নিশ্চিত থাকার পরও তিনি তা ত্যাগ করলেন। বংশ পরিবার দেশ ছাড়লেন, নির্বাসনের কষ্ট বরণ করলেন, এমনকি স্বৈরাচারের তৈরী করা অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দিয়ে খোদানুগত্যের প্রমাণ দিলেন। শুধু ইব্রাহীমই নয় আল্লাহর যে গোলামই হক প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হবেন, রক্তের নজরানা পেশ করবেন তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কারের ওয়াদা রয়েছে।

سَلَّمٌ عَلَى ابْرَ هِيمَ – كَذَلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ

ইব্রাহীমের উপর সালাম। আর এভাবে আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি। (সূরা সাফফাত ১০৯-১১০)

একে একে সব কঠিন থেকে কঠিনতম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর আল্লাহর পক্ষ এরপর থেকে নবী ইবরাহীম আঃ কে বলা হল-এখন তোমাকে সারা জাহানের ইমাম পদে নিযুক্ত করা হল যার যোগ্যতা তুমি অর্জন করেছ।

وَ اِذِ ابۡتَلٰۤی اِبۡرٰهٖمَ رَبُّهٗ بِکَلِمٰتٍ فَاَتَمَّهُنَّ ؕ قَالَ اِنِّیۡ جَاعِلُکَ لِلنَّاسِ اِمَامًا ؕ قَالَ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ ؕ قَالَ لَا یَنَالُ عَهۡدِی الظّٰلِمِیۡنَ

স্মরণ কর যখন ইব্রাহীমকে তাঁর রব কয়েকটা ব্যাপারে পরীক্ষা করলেন এবং সে সফলভাবে উত্তীর্ণ হল তখন তাকে জানিয়ে দেয়া হল তোমাকে মানবজাতির নেতা নিযুক্ত করছি। তিনি বললেন আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও কি? আল্লাহ বলেন জালেমদের জন্য আমার ওয়াদা প্রযোজ্য নয়।(সূরা বাকারা ১২৪)

ইব্রাহীম (আঃ) বিশ্ব জাহানের ইমাম পদে নিযুক্তি লাভের পর প্রয়োজন অনুভব করলেন একটা প্রশাসনিক রাজধানীর। পিতাপুত্র ইব্রাহীম ও ইসমাঈল মিলে খানায়ে কাবা পুনঃ প্রতিষ্ঠা করলেন। উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীর দুরবর্তী অঞ্চল থেকে এক আল্লাহ বিশ্বাসী সকল মুসলমান বৎসরে একবার এখানে এসে মিলিত হবে। সংঘবদ্ধভাবে এক আল্লাহর ইবাদাত করবে এবং এখান থেকে ইসলামী বিপ্লবের কর্মসূচী নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবে। বিশ্ব মুসলিমের এ বাৎসরিক সম্মেলনের নামই হজ্ব। কুরআনে হাকীমে কাবাঘর পুনঃ প্রতিষ্ঠা ও হজ্বের ইতিহাস বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছে।

اِنَّ اَوَّلَ بَیۡتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِیۡ بِبَکَّۃَ مُبٰرَکًا وَّ هُدًی لِّلۡعٰلَمِیۡنَ فِیۡهِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبۡرٰهِیۡمَ ۬ۚ وَ مَنۡ دَخَلَهٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَ لِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡهِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ

নিশ্চয়ই মানব জাতির জন্য সর্বপ্রথম গৃহ নির্মাণ হয়েছিল মক্কায় এটা বরকতময় ও সারা দুনিয়ার হোদায়েতের কেন্দ্র। এতে আল্লাহর প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ বিদ্যমান যেমন মাকামে ইব্রাহীম। যে সেখানে প্রবেশ করবে সেই নিরাপত্তা পাবে। মানুষের মধ্যে যাদের সেখানে যাওয়ার সামর্থ আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্ব করা তার কর্তব্য। কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের কারো মুখাপেক্ষী নন।(সূরা আলে ইমরান ৯৬-৯৭)

আরও পড়ুন-সন্তানকে মুমিন হিসেবে গড়ে তুলতে করণীয়

শুধু কাবাঘরই নিরাপদ স্থান নয় এর চার পাশে বহুদূর বিস্তৃত যতটুকু হারাম এলাকা রয়েছে ততটুকু এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ। এখানে হত্যা, লুণ্ঠন, মারামারি, যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ। এমনকি দুর্ধর্ষ কোন বেদুইন যদি এ সীমার মধ্যে তার পিতার হত্যাকারীকেও পাশে পায় তবুও তাকে স্পর্শ করার অধিকার নেই। ছোট একটি ক্ষুদ্র প্রাণী মশা কিংবা মাছিও মারা যাবেনা। এমনকি অহেতুক বিনা কারণে একটি জীবন্ত গাছের পাতা কিংবা দুর্বাঘাষ ও উপড়ানোর অনুমতি নেই।

اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اَنَّا جَعَلۡنَا حَرَمًا اٰمِنًا وَّ یُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنۡ حَوۡلِهِمۡ ؕ اَفَبِالۡبَاطِلِ یُؤۡمِنُوۡنَ وَ بِنِعۡمَۃِ اللّٰهِ یَکۡفُرُوۡنَ

তারা কি দেখেনা আমি হারামকে কিভাবে বিপদশুন্য ও নিরাপদ স্থান করেছি। অথচ এর চারপাশে মানুষের উপর হামলা হত। তবুও কি তারা বাতিলকেই বিশ্বাস করবে আর আল্লাহর নেয়ামতকে অস্বীকার করে যাবে? (সূরা আনকাবুত ৬৭)

وَ اِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَیۡتَ مَثَابَۃً لِّلنَّاسِ وَ اَمۡنًا ؕ وَ اتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰهٖمَ مُصَلًّی ؕ وَ عَهِدۡنَاۤ اِلٰۤی اِبۡرٰهٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ اَنۡ طَهِّرَا بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَ الۡعٰکِفِیۡنَ وَ الرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ

আর স্মরণ কর, যখন আমি কাবাকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানালাম এবং (আদেশ দিলাম ) ‘তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর’। আর আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, ‘তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ‘ইতিকাফকারী ও রুকূকারী-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর’।(সূরা বাকারা ১২৫)

কাবাঘর প্রতিষ্ঠা কালে আল্লাহর নবী ইব্রাহীম আঃ ও তার পুত্র ইসমাঈল যে দোয়া করেছিলেন আল্লাহপাক তাও কোরআনে হাকীমে উদ্ধৃতি করে দিয়েছেন।

وَ اِذۡ یَرۡفَعُ اِبۡرٰهٖمُ الۡقَوَاعِدَ مِنَ الۡبَیۡتِ وَ اِسۡمٰعِیۡلُ ؕ رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّا ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۱۲۷﴾ رَبَّنَا وَ اجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَیۡنِ لَکَ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِنَاۤ اُمَّۃً مُّسۡلِمَۃً لَّکَ ۪ وَ اَرِنَا مَنَاسِکَنَا وَ تُبۡ عَلَیۡنَا ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۲۸﴾ رَبَّنَا وَ ابۡعَثۡ فِیۡهِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡهِمۡ اٰیٰتِکَ وَ یُعَلِّمُهُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ وَ یُزَکِّیۡهِمۡ ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱۲۹﴾

স্মরণ কর যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কাবার দেয়াল তুলছিল তখন তারা প্রার্থনা করেছিল, হে আমাদের রব! আমাদের এই মেহনত তুমি কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। হে আমাদের রব! আমাদের উভয়কে তোমার অনুগত বান্দা কর আমাদের বংশ থেকে অনুগত উম্মত বানিও। আমাদের ইবাদাতের নিয়মপদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। তুমি তো ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।হে আমাদের রব! সে জাতির কাছে তাদের মধ্যে থেকে এমন একজন রাসুল পাঠাও যিনি তোমার আয়াৎ সমুহ তাদের কাছে পড়ে শুনাবেন, তাদেরকে কিতাব শিক্ষা দেবেন এবং তাদের চরিত্র সংশোধন করবেন। তুমি তো পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।(সূরা বাকারা ১২৭-১২৯)

হজ্জ জীবনে একবার

ধুসর মরুভূমিতে খাদ্য ও পানীয়ের যেন অভাব না হয় সে জন্য আল্লাহর এ বান্দা পরম রিজিকদাতার কাছে সে আবেদনটুকুও জানাতে ভুলে যাননি।

وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّ ارۡزُقۡ اَهۡلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنۡ اٰمَنَ مِنۡهُمۡ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ قَالَ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاُمَتِّعُهٗ قَلِیۡلًا ثُمَّ اَضۡطَرُّهٗۤ اِلٰی عَذَابِ النَّارِ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۱۲۶﴾

আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম বলল, ‘হে আমার রব, আপনি একে নিরাপদ নগরী বানান এবং এর অধিবাসীদেরকে ফল-মুলের রিয্ক দিন যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে’। তিনি বললেন, ‘যে কুফরী করবে, তাকে আমি স্বল্প ভোগোপকরণ দিব। অতঃপর তাকে আগুনের আযাবে প্রবেশ করতে বাধ্য করব। আর তা কত মন্দ পরিণতি’। (সূরা বাকারা ১২৬)

একই ধরনের প্রার্থনা সুরা ইব্রাহীমের ৬ষ্ঠ রুকুতে বর্ণনা করা হয়েছে। অত্যন্ত বিনীতভাবে আল্লাহর খলিল তার রবের কাছে কি বলছেন শুনুন-

وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰهِیۡمُ رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا الۡبَلَدَ اٰمِنًا وَّ اجۡنُبۡنِیۡ وَ بَنِیَّ اَنۡ نَّعۡبُدَ الۡاَصۡنَامَ ﴿ؕ۳۵﴾ رَبِّ اِنَّهُنَّ اَضۡلَلۡنَ کَثِیۡرًا مِّنَ النَّاسِ ۚ فَمَنۡ تَبِعَنِیۡ فَاِنَّهٗ مِنِّیۡ ۚ وَ مَنۡ عَصَانِیۡ فَاِنَّکَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳۶﴾

সুরণ কর যখন ইব্রাহীম বলেছিলেন হে আমার রব! এই শহরকে শান্তিপূর্ণ বানিয়ে দাও। আমাকে ও আমার সন্তানকে মুর্তিপুজার শিরক থেকে বাঁচাও। হে আমাদের রব। এ মুর্তিগুলি বহু মানুষকে গোমরাহ করেছে। সুতরাং যে আমার তরিকা অনুসরণ করবে সে আমাদের দলভুক্ত হবে আর যে আমার অবাধ্য হবে (তুমি ক্ষমা কর) তুমি তো বড় ক্ষমাশীল ও দয়াময়।

رَبَّنَاۤ اِنِّیۡۤ اَسۡکَنۡتُ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ بِوَادٍ غَیۡرِ ذِیۡ زَرۡعٍ عِنۡدَ بَیۡتِکَ الۡمُحَرَّمِ ۙ رَبَّنَا لِیُـقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ فَاجۡعَلۡ اَفۡئِدَۃً مِّنَ النَّاسِ تَهۡوِیۡۤ اِلَیۡهِمۡ وَارۡ زُقۡهُمۡ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّهُمۡ یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۳۷﴾

হে পরওয়ারদিগার! আমার বংশধরদের একটা অংশকে তোমার ঘরের কাছে এ ধুসর মরুভূমিতে এনে পুর্নবাসিত করেছি। মাবুদগো ! এ উদ্দেশ্যে যে তারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে। তুমি লোকদের অন্তরে এতটুকু উৎসাহ সৃষ্টি করে দাও যেন তারা (দলে দলে) এদিকে ছুটে আসে এবং ফল ফলাদির দ্বারা তাদের রিযিকের বন্দোবস্ত কর। সম্ভবত এর দ্বারা তারা তোমার কৃতজ্ঞ বান্দায় পরিণত হবে।

رَبَّنَاۤ اِنَّکَ تَعۡلَمُ مَا نُخۡفِیۡ وَ مَا نُعۡلِنُ ؕ وَ مَا یَخۡفٰی عَلَی اللّٰهِ مِنۡ شَیۡءٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ ﴿۳۸﴾ اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِیۡ وَهَبَ لِیۡ عَلَی الۡکِبَرِ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَسَمِیۡعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۹﴾

হে আমাদের পালনেওয়ালা! তুমি তো জান যা আমরা গোপনে করি আর যা প্রকাশ্যে করি। আকাশ আর জমীনের কোন কিছু আল্লাহর কাছে গোপন থাকেনা। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমার বার্ধ্যক্য বয়সে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় তিনি আমাদের দোয়া শুনছেন।

رَبِّ اجۡعَلۡنِیۡ مُقِیۡمَ الصَّلٰوۃِ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ ٭ۖ رَبَّنَا وَ تَقَبَّلۡ دُعَآءِ ﴿۴۰﴾ رَبَّنَا اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الۡحِسَابُ ﴿۴۱﴾

হে আমাদের মালিক! আমাকে ও আমার বংশধরদের নামাজ কায়েমকারী বানাও। মাবুদগো আমাদের দোয়া কবুল কর। ওগো মাওলা! যে দিন হিসাব নিকাশ হবে সেদিন আমাকে, আমার মা বাবাকে আর মুমিনদের তুমি ক্ষমা কর।

নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার অনুসারীদের ভুলে যাননি বরং কায়মনোবাক্যে প্রতিপালকের কাছে তাদেরকে সৎপথে থাকার, আনুগত্য ও ইবাদাতে অনুরাগী হওয়ার জন্য এবং তাদের জীবন জীবিকার জন্য প্রার্থনা করেছেন। আখেরাতের আদালতে যখন হিসাব নিকাশ হবে তখন সে মুছিবতের সময়ও যেন দলীয় লোকদের প্রতি আল্লাহ পাক ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখেন। নেতৃত্বের এমন আদর্শ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সেই নবীরই শোভা পায় যাকে আল্লাহ পাক জাতির পিতা খেতাব দিয়েছেন

مِلَّةَ أَبِيْكُمْ إِبْرَ هِمَ – هُوَ سَمْكُمُ الْمُسْلِمِينَ ()

এ জাতির পিতা ইব্রাহীম যিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলমান (সূরা হজ্জ ৭৮)

মূলত: আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর খলীল ইব্রাহীম (আঃ) এর উপর হুকুম ছিল হজ্জের উদ্দেশ্যে কাবাঘর তৈরী করা, তার রক্ষণাবেক্ষণ করা, পরিস্কার পরিচছন্ন রাখা এবং সর্বোপরি হজ্বের ঘোষণা দেয়া –

وَ اِذۡ بَوَّاۡنَا لِاِبۡرٰهِیۡمَ مَکَانَ الۡبَیۡتِ اَنۡ لَّا تُشۡرِکۡ بِیۡ شَیۡئًا وَّ طَهِّرۡ بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَ الۡقَآئِمِیۡنَ وَ الرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ ﴿۲۶﴾ وَ اَذِّنۡ فِی النَّاسِ بِالۡحَجِّ یَاۡتُوۡکَ رِجَالًا وَّ عَلٰی کُلِّ ضَامِرٍ یَّاۡتِیۡنَ مِنۡ کُلِّ فَجٍّ عَمِیۡقٍ ﴿ۙ۲۷﴾ لِّیَشۡهَدُوۡا مَنَافِعَ لَهُمۡ وَ یَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰهِ فِیۡۤ اَیَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰی مَا رَزَقَهُمۡ مِّنۡۢ بَهِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ۚ فَکُلُوۡا مِنۡهَا وَ اَطۡعِمُوا الۡبَآئِسَ الۡفَقِیۡرَ ﴿۫۲۸﴾

আর স্মরণ কর, যখন আমি ইবরাহীমকে সে ঘরের (বায়তুল্লাহ্র) স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না এবং আমার ঘরকে পাক সাফ রাখবে তাওয়াফকারী, রুকূ-সিজদা ও দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কারীর জন্য’।

আর মানুষের মাঝে হাজ্জের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে, আর সব (পথক্লান্ত) শীর্ণ উটের পিঠে, বহু দূরের গভীর পর্বত সংকুল পথ বেয়ে যেন তারা নিজদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাযির হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিয্ক দিয়েছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং দুস্থ-দরিদ্রকে খেতে দাও’। (সূরা হজ্জ ২৬-২৮)

সুরা বাকারা, ইব্রাহীম ও হজ্বের উপরোক্ত আয়াৎ সমূহ পর্যালোচনা করলে এ বিষয়টা স্পষ্ট হয় যে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বিশ্বব্যাপী যে ইমামাত প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং সে লক্ষ্যে দাওয়াত দিয়েছিলেন তার কেন্দ্র ছিল মক্কা। এর উদ্দেশ্য ছিল দুনিয়ার যে প্রান্তে যারাই এক আল্লাহকে তাদের ইলাহ মেনে নিয়ে বাস্তবজীবনে তার আনুগত্য করবে তারা যে দেশের অধিবাসীই হোকনা কেন বৎসরের কয়েকটি দিনের জন্য এখানে সমবেত হবেন।

একই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে নবী মুহাম্মদ সাঃ কেও আল্লাহপাক হজ্বের নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তিনি লোকদের মন মস্তিষ্ক ধোলাইর কাজ চালিয়েছেন। মক্কার কঠিন দিনগুলোতে অত্যাচার আর জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করে মদীনা যেতে বাধ্য হন। মাত্র দুই থেকে আড়াই হাজার ছাহাবা নিয়ে রসুলুল্লাহর এ হিজরত সম্পন্ন হয় মেরাজের মাত্র দুই বছরের মাথায়। এপর্যায়ে একটা পুর্নাংগ ও পরিপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র কাঠামো তৈরী করার হুকুম নাজিল হতে শুরু করে।

প্রথমে নামাজ ফরজ হয় অতঃপর হিজরতের অব্যবহিত পরেই ২য় ও ৩য় সনে যথাক্রমে রোজা ও যাকাত ফরজ হয়। ৬ষ্ঠ হিজরীতে যখন মুসলমানরা যুদ্ধ বিগ্রহের পর শক্তিশালী জাতি হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব সুসংহত হয়, তদানীন্তন বড় বড় শক্তি গুলো যখন ইসলামের বশ্যতা স্বীকার করে নেয় ঠিক তখনই মুসলমানদের কাবা কেন্দ্রিক আর্ন্তজাতিক সম্মেলন হজ্বের আনুষ্ঠানিক বাধ্য বাধকতার নির্দেশ আসে।

ইব্রাহীমের (আঃ) পরবর্তী সময় জাতি শিরকমুক্ত খাঁটি তওহীদ ভুলে গিয়ে পুনরায় মুর্তি পুজা শুরু করে দেয় এমনকি কাবা ঘরের ভিতরে ৩৬০ টা মুর্তি স্থাপন করে। তাদের মুর্খতা এতদূর বিস্তৃত হয় যে হজ্বকে তারা তীর্থযাত্রার আনুষ্ঠানিকতায় রূপান্তর করে। ছাফা মারওয়ায় দেবদেবীর মূর্তি স্থাপন করে এবং সেগুলিকে ঘিরে নারী পুরুষ উলংগভাবে তাওয়াফ ও ছায়ী করত। নাচ গান ব্যাভিচার মদপানের এক মহোৎসব হত এবং নির্লজ্জ কাজকর্মের অনুষ্ঠান বিশেষ জাঁকজমকের সাথে সম্পন্ন হত। তারা কুরবাণী করত কিন্তু কুরবাণীর রক্ত কাবা ঘরের দেওয়ালে লেপে দিত এবং গোশত কাবার দুয়ারে ফেলে রাখত।

এভাবে হজ্বের সকল আচার কানুন বিকৃত করেই ক্ষান্ত হয়নি এ উপলক্ষে নতুন নতুন রেওয়াজেরও প্রচলন করে। যেমন কোন সময় মালপত্র ছাড়াই এক কাপড়ে কপর্দকহীন অবস্থার হজ্ব যাত্রা করত, হজ্বের উপলক্ষে ব্যবসা ও কামাই রোজগারকে নাজায়েজ ভাবত, অনেকে আবার হজ্বের সময় পানাহার এবং কথাবার্তা বন্ধ রাখত।

চলবে…

লেখকঃ কলাম লেখক এবং সাবেক এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক জামান শামস

আরও পড়ুন