Ads

মোদির জোট শাসন ও ভারতের পথচলা

॥ মাসুম খলিলী ॥

নিজেকে একেবারে ভগবানের অবতার দাবি করা নরেন্দ্র মোদি শেষ পর্যন্ত এবার দলকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছেও নিতে পারেননি। যে রামমন্দির নির্মাণকে তিনি নির্বাচনে সাফল্যের প্রধান হাতিয়ার করতে চেয়েছিলেন, সেই অযোধ্যা ও চারপাশ নিয়ে গঠিত ফৈজাবাদ আসনে বিজেপি হেরে গেছে। ব্যক্তিগতভাবে আগের দুই মেয়াদে যে বারানসি আসন থেকে মোদি ৪ ও ৫ লাখের কাছাকাছি ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন, সেখানে তিনি এবার জয় পেয়েছেন মাত্র দেড় লাখ ভোটে। এমনকি ভোট গণনার বড় একটি সময় তিনি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে ছিলেন। এরপরও শেষ পর্যন্ত তিনি এনডিএ জোটের সঙ্গীদের নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। ৭২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়ে তিনি শপথও নিয়েছেন।

তবে তার এ যাত্রা কণ্টকমুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে না।

মোদি যেভাবে আগের দশ বছর ভারত শাসন করেছিলেন, সেভাবে এবার তার সময় যাবে বলেও মনে হয় না। জোটের মধ্যে দূরত্ব, দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব, আরএসএস এর সাথে মতানৈক্য, বেকারদের কাজ দেবার অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থতা আর অতি আত্মবিশ্বাস মোদিকে ৪শ’ পার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে যেভাবে ব্যর্থ করেছে, তেমনি এটি তার ভঙ্গুর নতুন পথযাত্রাকেও আচ্ছন্ন করে তোলার আশঙ্কা শুরুতেই প্রবল হয়ে উঠেছে।

ভারতের বিস্মৃত স্বাধীনতা সংগ্রামী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ

নির্বাচনে স্বপ্নভঙ্গ

নির্বাচনে চারশ’ আসন পার করার কথা বলে তিনশ’রও অনেক নিচে আটকে যাওয়ার বিষয়টি সরকার গঠনের শুরুতেই মোদির প্রতিপত্তিকে মাটিতে নামিয়েছে। তবুও সরকার গঠনের জন্য নমনীয়তাকে কৌশল হিসেবে নেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে মন্ত্রিসভা তিনি তৈরি করেছেন, তাতে সামনের পথচলাটা জোট সরকারের জন্য অনুকূল নাও হতে পারে।

নরেন্দ্র মোদি যে ৭২ জন মন্ত্রীকে তার ক্যাবিনেটে স্থান দিয়েছেন, তাদের মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী রয়েছেন ৩০ জন। বাকি ৬২ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ৫ জনকে স্বতন্ত্রভাবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা, যোগাযোগ এসব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটা রাখা হয়েছে বিজেপি সদস্যদের জন্য। প্রধান জোট সঙ্গী টিডিপি সংসদের স্পিকারের আসন চেয়েছিল। সেটি চন্দ্রবাবু নাইডুকে দেয়া হবে কিনা, এখনো পরিষ্কার নয়।

সরকার গঠনের সবকিছু মসৃণভাবে সম্পন্ন হয়েছে- এমনটিও মন্ত্রিসভা দেখে মনে হয় না। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১২ জন এমপি বিজেপি থেকে জয়ী হয়েছেন, কিন্তু তাদের কাছ থেকে একজনকেও পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয়া হয়নি, প্রতিমন্ত্রীর পদ দেয়া হয়েছে দুজনকে। অথচ বিহার থেকে একদলের এক এমপি জিতেন মাঝিকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়েছে।

সরকারে এসব প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে এবার জোটের অংশীদার দল এবং শাসকদলের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে প্রবল যে আশঙ্কা, সেটি হলো বিজেপির ক্ষমতার যে মূল ভিত্তি সেই সংঘ পরিবারের সাথে বোঝাপড়ার গ্যাপ নিয়ে। নির্বাচনের আগে থেকেই স্পষ্ট হচ্ছিল আরএসএসের সাথে বিজেপি নেতৃত্বের সম্পর্ক ততটা ভালো যাচ্ছে না। মোদির আস্থাভাজন বিজেপিপ্রধান জেপি নাড্ডা ঘোষণা করেন, বিজেপি এখন অনেক শক্তিমান ও সক্ষম একটি দল। এখন আরএসএসের সাহায্য নেওয়ার দরকার নেই বিজেপির।

ভারত বিভাগের দাবি রাজনৈতিকভাবে ভ্রান্ত ।। মাঃ আজাদ

এটি যে মোদি কোম্পানির কথার কথা নয়, সেটি বোঝা যায় নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে। আরএসএস ঘনিষ্ঠরা একের পর এক গুরুত্ব হারাতে থাকেন শাসকদলে। উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের পছন্দের নেতা ও এমপিরা মনোনয়ন না পেয়ে অমিত শাহ ঘনিষ্ঠরা মনোনয়ন পেতে থাকেন। এর মূল্য দিতে হয় উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে। সেখানে বিজেপি সমাজবাদী পার্টির পর দুই নম্বর দলে পরিণত হয়েছে।

উড়িষ্যায় নবিন পট্টনায়কের রাজনৈতিক ভুলে বিপর্যয়কর ফলাফলে বিজেপির আসন ৮ থেকে ২০-এ উন্নীত না হলে, বিহারে নীতীশ কুমারের শেষ সময়ের কৌশলে আরজেডির অধিক আসন প্রাপ্তি ঠেকে না গেলে এবং অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর সাথে বোঝাপড়া তৈরি করতে না পারলে বিজেপির আসন দুইশ’র আশপাশে আটকে যেত। তবে চরম বিপর্যয় ঠেকানো গেলেও সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে।

সরকার নিয়ে সংশয়

বিজেপি হাইকমান্ডকে আসন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের জন্য জবাবদিহি করতে হচ্ছে দলের মধ্যেই। এবারের মোদির সরকার কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে তার দলের নেতা কর্মীরাই নানা ধরনের সংশয়ে পড়েছেন। মোদির ৩ সরকারে ৬১ জন তথা ৮৫ শতাংশ মন্ত্রী নেয়া হয়েছে বিজেপি থেকে, যা আসন প্রাপ্তির অনুপাতের চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদের একটিও দেয়া হয়নি জোট শরিকদের। এটি ভবিষ্যৎ অন্তর্দ্বন্দ্বের একটি কারণ হতে পারে জোট সরকারের মধ্যে। আবার দল থেকে রাজ্যভেদে মন্ত্রী নেয়ার বিষয়েও অসন্তোষ রয়েছে।

বিজেপির মোদি-শাহ নেতৃত্ব শুরুটা যেভাবে করছেন, তাতে মনে হতে পারে তারা কোনো চাপের কাছে নত হবেন না। আর চেষ্টা করবেন জোট অংশীদার টিডিপি ও জেডিইউর ওপর সরকার চালানোর যে নির্ভরতা সেটি কাটিয়ে ওঠার। এজন্য দুটি পথ তারা নিতে পারেন। একটি হলো বিরোধী ইন্ডিয়া জোট থেকে কোনো দলকে শাসক জোটে নিয়ে আসা আর অন্যটি হতে পারে বিরোধী বা তৃতীয়পক্ষের এমপিদের শাসক জোটে টানা।

জিন্নাহ নয়, পাকিস্তানের স্রষ্টা নেহরু ও প্যাটেল

এ কাজটি মোদি কোম্পানির প্রথম ও দ্বিতীয় সরকার সফলভাবে করে অনেক রাজ্য সরকারের পতন ঘটিয়েছে। অথবা অধিক আসনে জয়ী হওয়ার পরও বিরোধীদের সরকার গঠনে বাধা তৈরি করে নিজেরা ক্ষমতায় গেছে। এবার জোট সরকারের বাস্তবতায় সেটি কতটা সম্ভব হবে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এর আগে এনডিপি জোটে এসে বিজেপির সাথে বোঝাপড়া যারা করেছেন, সেসব আঞ্চলিক দলের অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো নয়। ওয়াইএসআরসিপি একসময়ের দাপটি দল থেকে বিজেপি সান্নিধ্যে গিয়ে এখন ভেঙেচুরে সঙ্গীন অবস্থায় পৌঁছেছে। উড়িষ্যায় বিজু জনতা দল বিরোধীদের সাথে দূরত্ব রেখে বিজেপির কাছাকাছি থেকেছে। এবার নবিন পট্টনায়ক কেরালার অধিবাসী সাবেক মুখ্য সচিবকে তার উত্তরাধিকারী করছেন প্রচার চালিয়ে বিজেপি বিজু জনতা দল থেকে লোকসভার ১২টি আসনই ছিনিয়ে নিয়েছে।

মহরাষ্ট্রে শিবসেনা বিজেপির সাথে জোট করেছিল। পরে দলের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরেকে দল থেকে বের করে শিবসেনাকে দ্বিখণ্ডিত করে মোদি-শাহ জুটি। একই অবস্থা হয় শরদ পাওয়ারের এনসিপির ক্ষেত্রে। এসব দেখে তেলেগু দেশম পার্টির চন্দ্র বাবু নাইডু আর জেডিইউর নীতীশ কুমার যথেষ্ট সাবধান হয়ে পথ চলছেন। তারা ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিরোধী জোটের সাথেও সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। তাদের দুজনেরই পক্ষ পরিবর্তনের ঐতিহ্য রয়েছে।

বিরোধী জোটের সম্ভাবনা

এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সরকার গঠনের মতো আসন না পেলেও তাদের ২৩৪টি আসন এক শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে। এমনকি যেকোনো গৃহদাহের কারণে এনডিএ জোটে ভাঙন দেখা দিলে ইন্ডিয়া বলয় সরকার গঠন করতেও সক্ষম হতে পারে। আগের নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস ৫২টি আসন পেয়েছিল এবার সেটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৯৯-তে উন্নীত হয়েছে। বিরোধী জোটের আসন আগেরবার ছিল ৯১টি, যা এবার ২৩৪-এ উন্নীত হয়েছে।

আগেরবার শাসকদল বিজেপি ৩৭.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন জিতেছিল ৫৫.৮০ শতাংশ আর এবার ৩৬.৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন জিতেছে ৪৪.২০ শতাংশ। অন্যদিকে বিরোধী কংগ্রেস গতবার ১৯.৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন জিতেছিল ৯.৫৭ শতাংশ। আর এবার ২১.৯৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন জিতেছে ১৮.২৪ শতাংশ। বিরোধী জোটের মধ্যে এসপি এবার ৪.৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ৬.৮২ শতাংশ। আগেরবার তারা ২.৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে ১ শতাংশের মতো আসন পেয়েছিল।

ইতিহাসের অজ্ঞতা গোলামী ডেকে আনতে পারে ।। ১ম পর্ব

আগেরবারের তুলনায় বিরোধী জোটের ভোট যা বেড়েছে আসন বেড়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এর একটি কারণ হলো এবার বিরোধীরা যথাসম্ভব জোটবদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়েছে। ফলে তাদের ভোটপ্রাপ্তির তুলনায় আসনপ্রাপ্তি প্রায় কাছাকাছি থেকেছে অথবা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ হিসাব-নিকাশে একটি বিষয় স্পষ্ট, সেটি হলো ইন্ডিয়া জোটের একের বিপরীতে এক প্রার্থী দিতে পারলে এবং জেডিইউ বিজেডি ও টিডিপিকে বিরোধী জোটে আনতে পারলে নিশ্চিতভাবে এবারের সরকার বিরোধীপক্ষের হতো।

মোদির তিন নম্বরের ভবিষ্যৎ

সে যাই হোক প্রশ্ন হলো- মোদি তিনের ভবিষ্যৎ কী হবে আর এ আমলে ভারতে অবস্থাই-বা কী দাঁড়াবে। এবারের নির্বাচনে মোদি হিন্দু মুসলিম ধর্মের পরিচয়ের বিষয়টি নজিরবিহীনভাবে সামনে নিয়ে আসেন। এর আগে রামমন্দির উদ্বোধনকে ঘটা করে প্রচার করেও হিন্দু ধর্মীয় নেতৃত্বের শীর্ষপর্যায়ের বিরোধিতায় সেটিকে কাজে লাগাতে পারেনি বিজেপি। সব শেষে মোদি নিজেকে বায়োলজিক্যালি দুনিয়ায় না এসে ভগবানের অবতার হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি করেন। এর কোনোটি এবার বিজেপির পক্ষে কোনো ঢেউ আনতে পারেনি। বরং ক্ষেত্রবিশেষে মোদিকে হাসির পাত্র বানিয়েছে।

এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে বলে মনে করা হয়। প্রথমটি হলো আরএসএস বিজেপিকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ভূমিকা রাখা থেকে নিজেদের বেশ খানিকটা গুটিয়ে রেখেছে বলে মনে হয় সংঘ পরিবারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মোদি-শাহদের স্বাধীনভাবে পথ চলার প্রবণতা দেখে। দ্বিতীয়ত, ভারতের ক্ষমতার গভীর বলয়ের বড় একটি অংশ মোদি শাসন অব্যাহত থাকার মধ্যে রাষ্ট্রে বিভক্তি-বিভাজনের একটি চিহ্ন অবলোকন করেছেন। যার ফলে ডিপ স্টেট আগের মতো শাসকদলকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়নি। তৃতীয়ত, ইসরাইল ও জায়োনিস্টদের সাথে বিজেপির বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বিশেষ বোঝাপড়া তৈরি হয়ে থাকলেও পশ্চিম; বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রুশ ঘনিষ্ঠতা ও অন্যান্য কারণে কৌশলগত মেরুকরণ তৈরি হয়নি।

মুসলমানের রক্তে লেখা ভারতের স্বাধীনতা

এর ফলে ক্ষমতার যেসব টুলস একটি দলকে শাসন কাজে এগিয়ে রাখে সেসব ফ্যাক্টর এবার বিজেপিকে ততটা সমর্থন দেয়নি। এমন একটি কথাও শোনা যায় যে, গভীর ক্ষমতাবলয়ে বিজেপি প্রশ্নে বড় আকারের ভাগাভাগি তৈরি হয়েছিল এবার। যার ফলে বিজেপি সরকারি ম্যাকানিজমকে নিজেদের ক্ষমতার জন্য পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি।

প্রশ্ন হলো- এ মেরুকরণে বিজেপি জোটের বর্তমান সরকারের কী পরিণতি দাঁড়াবে। খুব দ্রুততম সময়ে বিজেপি সরকার ভেঙে পড়বে- এমনটি আশা করা ঠিক হবে না। তবে সরকার পর্যায়ক্রমে ক্ষমতার ওপর তার নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকবে। মোদি জোট অংশীদারদের যথাসম্ভব আস্থায় রেখে চলতে পারলে হানিমুন সময়টা দীর্ঘায়িত হতে পারে। আর যদি বিরোধীপক্ষ ও জোট শরিকদের মধ্যে মেরুকরণ করে বিভক্তির আয়োজন করে নিজের দল ভারী করতে চায়, তাহলে দ্রুত পতনের একটি পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

চার নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ

আগামী এক বছর সময়ের মধ্যে ভারতে যে চারটি রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আগামী নভেম্বর মাসে হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ দুটি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে আর শাসকদল হরিয়ানার অর্ধেকের কাছাকাছি আসন হারিয়েছে। এ দুটি রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরা কঠিন বিজেপির জন্য। আর পরের জানুয়ারিতে ঝাড়খণ্ড এবং ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে নির্বাচন হবার কথা। এ দুটি রাজ্যে বিজেপি ভালো সাফল্য পেয়েছে লোকসভায়। এর মধ্যে লোকসভায় খারাপ ফল করলেও বিধানসভায় ভালো করার ঐতিহ্য রয়েছে আম আদমি পার্টির। ফলে আগামীতে তিনটি রাজ্যে বিরোধীপক্ষের জয়ী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ক্ষুদ্র রাজ্য ঝাড়খণ্ডে এবার জিততেও পারে বিজেপি।

ভারতের NEET তথা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম আমিনা

রাজ্য নির্বাচনে মোদির নতুন সরকারের সংহতি যেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তেমনিভাবে এ রাজ্যগুলোর নির্বাচনের ফলাফল মোদির ৩ নম্বর সরকারের স্থিতির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। আবার মোদির জোটসঙ্গী টিডিপির পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের সংরক্ষণ আর জেডিইউর জাতভিত্তিক শুমারির নীতি নিয়েও বিরোধ দেখা দিতে পারে বিজেপির সাথে, যার প্রভাব পড়তে পারে সরকারের স্থিতির ওপর।

সব মিলিয়ে মোদি-শাহের রাষ্ট্র চালানোর যে ধরন রয়েছে, তাতে জোট সরকারে স্থিতি আসার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হয়। আর সেটি ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে যেমন প্রভাবিত করতে পারে, তেমনিভাবে চার পাশের প্রতিবেশী দেশগুলোকেও প্রভাবিত করতে পারে। এসব রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশে এখনো দিল্লির নিয়ন্ত্রক প্রভাব রয়েছে। সে প্রভাবেও বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব নয় বলে মনে হচ্ছে।

লেখকঃ মাসুম খলিলী,  কলাম লেখক ও কার্যনির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত

[লেখাটি  সোনার বাংলায় পূর্ব প্রকাশিত ]

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে অনুবাদক মাসুম খলিলী

আরও পড়ুন